September 22, 2024, 11:32 am

সংবাদ শিরোনাম
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ফয়জুল আজীম নোমান এর যোগদান জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে শহীদ জিয়া ও সকল শহীদদের স্মরণে স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি কু‌ড়িগ্রা‌মের উলিপু‌রে বিদ‌্যুৎস্পৃষ্টএক যুব‌কের মৃত্যু যশোরে বালিচাপা অবস্থায় প্রতিবন্ধী যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে ৪০ পিস ইয়াবা ও ১ টি ভ্যান জব্দসহ ২ জন মাদক কারবারি গ্রেফতার জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফর রহমান মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধে কুড়িগ্রামে জলবায়ু ধর্মঘট খুলনা দৌলতপুর রেলস্টেশন ও মহসিন মোড় কাঁচাবাজারে এলাকাবাসীর উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

সুন্দরগঞ্জে অধ্যক্ষ’র বাজিমাৎ

আবু বক্কর সিদ্দিক, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
 
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শোভাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন নূরীর অবিরাম বাজিমাৎ দেখে এলাকাবাসী হতভম্বিত হয়েছেন।
 বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কলেজের আইসিটি বিভাগের জন্য একটি প্রকল্পাধীন ২১ লাখ ৭১ হাজার টাকার মালামাল চুরির অভিযোগ এনে থানায় একটি মামলা করেন অধ্যক্ষ। মামলাটি থানার তৎকালীন এসআই আবুল কালাম আজাদ, গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই রফিকুল ইসলামের বদলে ৩য় বারের মতো তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন পিবিআই’র এসআই ইলিয়াস হোসেন। প্রাথমিক তদন্তকালে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বেরিয়ে আসতে থাকা তথ্য উপাত্ত ও স্থানীয় সচেতন মহলের নানান প্রশ্ন ছাড়াও তোপের মুখে অবস্থা বেগতিক ভেবে সময় ক্ষেপনে ব্যস্ত হন অধ্যক্ষ। অবশেষে নানান অপকৌশলে মামলার আইও (তদন্তকারী কর্মকর্তা) পরিবর্তনে উঠেপড়ে লাগেন অধ্যক্ষ নূরী। এভাবেই চলছে কালক্ষেপণের পালা। কলেজ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৩ সেপ্টম্বর দুপুরে আইসিটি বিভাগের মালামাল সরবরাহকারী ফ্লোরা কোম্পানী লিমিটেডের প্রতিনিধি স্ক্যানার সংযোজন দিতে আসেন। এসময় অধ্যক্ষ তার কাছে থাকা চাবীদ্বারা কলেজের বহুতল ভবনের আইসিটি কক্ষের তালা খুলে দেখেন ৮টি ল্যাপটপ, ৮টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ১টি মনিটরসহ ১১লাখ ৭১ হাজার টাকার মালামাল কক্ষের ভিতরে নেই।  এ নিয়ে অধ্যক্ষ বাদী হয়ে কলেজের নৈশ্য প্রহরী রফিকুল ইসলামের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা চোর কে বা, কারা ডুপ্লিকেট চাবীদ্বারা কিংবা, কেমিকেল ব্যবহারের মাধ্যমে তালা খুলে মালামাল চুরি করেছে মর্মে থানায় মামলা করেন। এ মামলায় আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক তার আপন শ্যালক আহসান হাবিব মুকুলকে এঁড়িয়ে যান। মামলার তদস্তকারী কর্মকর্তা আসার পূর্বে ৪তলা ভবনের নীচ তলার কেচি গেইট ও পরবর্তীতে তার কার্যালয়ের টেবিলের ড্রয়ার ভেঙ্গে চুরি দৃৃৃৃশ্য স্বরূপ এমন ধরণের দৃশ্য দেখানো এছাড়াও নানাভাবে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের অপচেষ্টা চালান। এ মামলায় পর্যায়ক্রমে নৈশ্য প্রহরী রফিকুল ইসলাম, পিয়ন সাজ্জাদ হোসেন মিন্টু, আব্দুল কাদের ও দোকানদার বকুল মিঞাকে আটকের পর বকুল মিঞাকে ছাড়া নেন অধ্যক্ষ। পুলিশ নৈশ্য প্রহরীসহ ২ পিয়ন মিলে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান। নাটকীয় এ ঘটনার প্রথম পর্যায়ে যেসব তথ্য বেরিয়ে আসে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- কলেজের ২য় তলা থেকে ৪ তলা পর্যন্ত সমস্ত তালাবদ্ধ রেখে নিজ দায়িত্বে চাবী বহন করেন অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন নুরী ও তাঁর আপন শ্যালক ও কলেজের কম্পিউটার শিক্ষক হাসান কবীর মুকুল। এছাড়া, অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের দায়েরকৃৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তককারী কর্মকর্তা কলেজে আসার ৪ ঘন্টা আগে কতিপয় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় মিস্ত্রী ডেকে গ্রীল কেঁটে চুরির দৃশ্য দেখানোর অপচেষ্টা চালানোর ঘটনার প্রমাণ দেন নৈশ্য প্রহরী রফিকুল হক, গভর্নিং বডির সদস্য ও শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে কলেজের নৈশ্য প্রহরীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন অধ্যক্ষ। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এরআগেও কলেজ থেকে চুরি যাওয়া কম্পিইটার অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন নুরী তার বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। এছাড়া, কলেজের পুরাতন গৃহের বেশকিছু টিন অধ্যক্ষ তার নিজ বাড়ির ঘিড়াসহ নানান কাজে ব্যবহার করছেন। এবারে এসব মালামাল চুরি যাবার বিষয়টি রহস্যজনকভাবে ধামাচাপা দেয়ার জন্য নানান পাঁয়তারা চালান অধ্যক্ষ। কিন্তু, তা না পেয়ে অবশেষে থানায় অভিযোগ করেন অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে। এসব সূত্র আরো জানায়, কলেজের বহুতল ভবনের তালাবদ্ধ সবগুলো দরজা জানালা অক্ষত অবস্থায় থাকার পরও মালামাল হারিয়ে যাওয়াটা হাস্যকর ও রহস্যজনক। তাঁদের প্রশ্ন, অধ্যক্ষ’র নিজ দায়িত্বে থাকা সব কিছুই ঠিক থাকলে ভবনের ভিতরের সম্পদ খোঁয়া যায় কী ভাবে? ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কলেজটিকে পুঁজি করে অধ্যক্ষ বেপরোয়াভাবে ব্যাপক লুটপাট, ভূমিদস্যুতা, নিয়োগ বাণিজ্য চালিয়ে কয়েকটি বিলাশবহুল, বাড়ি, বিষয় সম্পত্তিসহ বিভিন্ন ব্যাংক বীমায় নামে বেনামে সম্পদের স্তুপ গড়িয়ে এখন যেন রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন নূরী তার জন্ম তারিখ থেকে মাত্র সাড়ে ১০ বছর বয়সে দাখিল পাশের সনদকে উচ্চতর অন্যান্য শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের সঙ্গে সংযুক্ত দেখিয়ে উপজেলার বোয়ালী দারুল উলুম ফাযিল মাদ্রাসায় প্রভাষক পদে চাকরিকালে কোনরূপ ছুটি ছাড়াই নিয়মিতভাবে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী হয়ে একই সঙ্গে ঐ ইনডেক্সে প্রথমে শোভাগঞ্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও বর্তমানে শোভাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত আছেন। এ কলেজকে পুঁজি করে কলেজের উত্তর পাশে কৃষক ইব্রাহিম আলীর জমিসহ কলেজের অপর পাশের বসতবাড়ি ও পরিবারে নূরী বাহিনী নামে বাহিনী গঠন করে বিভিন্ন সময় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন, মিথ্যা মামলায় হয়রাণী ও ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন। মানবতা বিরোধী অপরাধে দায়েকৃত একটি মামলায় মৃত্যদন্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামী আবু সালেহ মাঃ আব্দুল আজিজের আশীর্বাদপুষ্ঠ হিসেবে আজিজেরই ক্ষমতাবলে দেলওয়ার হোসেন নূরী যে তান্ডব চালিয়েছন। তা থেকে বর্তমানে কোন অংশে কমতি না থাকায় তার এ চমকে এলাকাবাসী হতভম্বিত ও আতঙ্কগ্রস্থ। এসব বিষয়ে অধ্যক্ষ নূরীর ব্যবহৃত ০১৭১৩৭৮৩৮৪৮ নম্বরে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি কল গ্রহন না করে কেটে দেন।
চুরি ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা- গাইবান্ধা পিবিআই-এর এসআই ইলিয়াছ হোসেন জানান, মামলাটির তদন্ত চলছে। করোনা পরিস্থিতির জন্য একটু বিলম্ব হচ্ছে। তিনি তদন্ত কাজে স্থানীয়দের কাছ থেকে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
এ বিষয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজর গভর্নিং বডির সভাপতি- এসএম গোলাম কিবরিয়া জানিয়েছেন, অধ্যক্ষ বিষয়টি অবগত করতে আসলে তাকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১ মে ২০২০/ইকবাল
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর